এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৪র্থ সপ্তাহ

এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৪র্থ সপ্তাহ HSC Bangla 4th Week ( বাংলা ১ম পত্র ) Assignment. এইচএসসি Bangla Assignment Answer, এইচএসসি বাংলা অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর, Hsc Bangla Assignment Answer.Bangla 1st paper Assignment। এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র চতুর্থ এসাইনমেন্ট. Similarly, Hsc Bangla 1st Paper Assignment 2021. এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র এসাইনমেন্ট ২০২২. Moreover, Hsc Bangla 1st Paper Assignment 2022. HSC Bangla 4th Week ( বাংলা ১ম পত্র ) Assignment 2021

এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১ | ৪র্থ সপ্তাহ

বিদ্রোহী কবিতার
আলােকে কবির
বিদ্রোহী সত্তার
স্বরূপ নির্ধারণ
এবং বর্তমান
সময়ে কবিতাটির
প্রাসঙ্গিকতা যাচাই

জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গােত্র,পেশা, ক্ষুদ্র নৃগােষ্ঠী
নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি সমমর্যাদার
মনােভাব ব্যক্ত করতে পারবে।

১. ‘বিদ্রোহী কবিতায় কবি। নিজেকে যে যে রূপে উপস্থাপন করেছেন, তা খুঁজে বের করা।

 

২. কবিতায় যেসব ঐতিহ্য ও পুরাণের ব্যবহার করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা।

 

৩. কবির বিদ্রোহী-সত্তা সমাজের যেসব অসাম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে, সেগুলাে চিহ্নিত করা।

 

৪. বর্তমান সময়ের নানারকম অসাম্যের প্রেক্ষাপটে ‘বিদ্রোহীকবিতার প্রাসঙ্গিকতা যাচাই।

 

৫. বানান ও ভাষাশৈলীর ব্যাপারে মনােযােগী থাকা।

 

 

বিদ্রোহী কবিতার আলােেক কবির বিদ্রোহী সত্তার স্বরূপ নির্ধারণ

১. বিদ্রোহী কবিতায় কবি নিজেকে যে যে রূপে উপস্থাপন করেছেনঃ

‘বিদ্রোহী কবিতায় নজরুলের বিদ্রোহচেতনার প্রকাশ ঘটেছে। ভারতীয় এবং পশ্চিম এশীয় পুরাণ ও ইতিহাসের আধার থেকে শক্তি সঞ্চয় করে নজরুল এখানে প্রবল বিদ্রোহবাণী উচ্চারণ করেছেন । নজরুল বিদ্রোহ করেছেন ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে , সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে , শৃঙ্খল পরা আমিত্বের বিরুদ্ধে।এই কবিতা রচনার জন্য নজরুল ‘বিদ্রোহী কবি’র আখ্যা পেয়েছেন। এখানে নজরুল তার বিদ্রোহকে সঙ্গতকারণেই আমি ‘ প্রতীকে ব্যঞ্জনাময় করেছেন এবং নিজেকে অজেয় বলে উপলব্ধি করেছেন। তাইতাতে ‘বিদ্রোহী’ আত্মশক্তিকে উদ্বোধিত করার লক্ষ্যে প্রথমেই কবির সরব ঘোষণা :

বল বীর বল উন্নত মম শির! নজরুল এই কবিতার প্রথম স্তবকেই প্রসঙ্গত উত্থাপন করেছেন মহাবিশ্ব , মহাকাশ , চন্দ্রসূর্যগ্রহতারা , ভূলাকে দ্যুলাকে , খাদোর আসন , বিশ্ববিধাত্রী , চির – বিস্ময় , রাজটীকা , রুদ্র ভগবান আর দীপ্ত জয়শ্রীর কথা। বক্তব্যের অন্তবর্মিত অনুক্রম অনুযায়ী কবিতাটিকে মাটে দশটি স্তবকে ভাগ করা যায় । প্রথম স্তবকে ‘আমি’ – র শক্তিময়তার পাশাপাশি বিজয়ের প্রত্যয় নিনাদিত , আর এই বিজয়ের জন্যে প্রয়াজেন আঘাতকারীর ‘আমি’ – র ধ্বংসাত্মক রূপ , যা কবিতাটির ১১ থেকে ২৭ পঙক্তি পর্যন্ত ঘূর্ণিত : “ আমি ঝঞা , আমি ঘূর্ণি / আমি পথ সম্মুখে যাহা পাই যাই চূর্ণি ‘। শক্তির উদ্বোধন ও সংহারচিত্রের পরই হঠাৎ শুরু হলা: মিলনের নৃত্য পাগল ছন্দ । ২৮ থেকে ৩৭ পঙক্তি পর্যন্ত আমি এমন এক মুক্ত জীবনান্দ , যে শত্রুর সাথে গলাগলি করে, আবার মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে।

২. কবিতায় যেসব ঐতিহ্য ও পুরাণের ব্যবহার করা হয়েছেঃ

এই কবিতার ছত্রে ছত্রে পৌরানিক রুপকের ব্যবহার এতাটাই যথার্থ যে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই । রূপকের প্রয়াগে দেখে যে কেউ আঁচ করতে পারবেন, গ্রীক আর ইন্ডিয়ান মিথের ওপর কবির কতাটো দখল ছিল । এই কবিতায় যেসব ঐতিহ্য ও পুরাণের ব্যবহার করা হয়েছে তা ধাপে ধাপে নিন্মে ব্যাখ্যা করা হলা:

ভূ-লােক মানে পৃথিবী , দ্যুলাকে মানে স্বর্গ , আর গালেক মানে বিষ্ণুলাকে অথবা স্বর্গে বিষ্ণু বা কৃষ্ণের বাসস্থান। কৃষ্ণ – রাধার বৃন্দাবন এখানেই অবস্থিত । ঋগ্বেদে রুদ্র বর্জের দেবতা , গ্রীক মিথের থর ‘ এর মত । ক্ষেপে গেলে বজ্র ছুড়ে মারেন । ইনি ব্রহ্মার পুত্র । তার ক্রোধে নেমে আসে ধ্বংস আর মহামারী । মহাদেব মহাপ্রলয়ের সময় তান্ডব নৃত্য নেচেছিলেন , গজাসুর ও কালাসুরকে বধ করেও তিনি তান্ডব নৃত্য নেচেছিলেন । এই তান্ডব নৃত্যকলার উদ্ভাবক হিসেবে তাকে নটরাজ ডাকা হয় । পৃথু ছিলেন অত্রি বংশের অত্যাচারী রাজা বেন এর পুত্র । রাজা বেন এর মৃত্যুর পর তার ডান বাহ থেকে পৃথুর জন্ম ।

‘বিদ্রোহী কবিতার আলাতকে কবির বিদ্রোহী সত্তার স্বরূপ নির্ধারণ

প্রজা কল্যানার্থে পৃথু পৃথিবীকে বশ করেন । তার রাজত্বকে বলা হয় পৃথু । ভীম পাঁচ পান্ডবদের একজন । কুন্তির গর্ভে এবং বায়ুর ঔরসে এর জন্ম । দুর্যোধন তাকে হত্যার জন্য তার খাবারে বিষ মিশিয়ে অজ্ঞান করে পানিতে ফেলে দেন । পানিতে নাগরাজ বাসুকীর কৃপায় ভীম বেঁচে যান এবং আরা েশক্তিশালী হয়ে ফিরে আসেন । কবি ‘ভাসমান মাইনের সাথে ভীম বিশেষন সম্ভবত একারনের এনেছেন । ধুর ‘শব্দের অর্থ জটাভার বা ত্রিলােেকর চিন্তাভার । শিব তার মাথায় জটাভার ধারণ করেন অথবা ত্রিলােেকর চিন্তাভার ধারণ ও বহন করেন । এসকল ভার বহন ও ধারণের কারণে তারই নাম ধূর্জটি ।

যুগল কন্যা সমুদ্র মন্থনের সময় উখিত কৌস্তভ মনি যা বিষ্ণু ও কৃষ্ণ বক্ষে ধারন করতেন ছিন্নমস্তা দশ মহাবিদ্যা বা দশ প্রকার শক্তির রুপের একটি । চন্ডী অসুর বধের সময় দুর্গার এক ভীষন রূপ । ইসলাম ধর্মমতে কেয়ামত বা মহাপ্রলয় শুরুর আগে ইস্রাফিল নাম্মীফেরেস্তা শৃগার বাজাবেন ।

বারেরাক দ্রুতগতির স্বর্গীয় বাহন , যাতে করে মহানবী ( সাঃ ) মেরাজে গিয়েছিলেন । উচ্চৈঃশ্রবা ইন্দ্রের বাহন , যা সমুদ্রমন্থনের সময় জন্ম নেয় এবং অশ্বশ্রেষ্ঠ বলে পরিগনিত । জিব্রাইল একজন ফেরেস্তা যিনি স্বর্গীয় দূত হিসেবে কাজ করেন।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার আলােেক কবির বিদ্রোহী সত্তার স্বরূপ নির্ধারণ

৩. সমাজের অসাম্যের বিরুদ্ধে কবির বিদ্রোহী সভাঃ

কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিচিত্তে বিদ্রোহী চেতনা প্রকাশ পেয়েছে । তিনি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ঘুমন্ত দেশ ও জাতিকে মুক্ত করবার জন্য নিজে যেমন বিদ্রোহ ঘাষণা করেছেন , তেমনি জাতিকে জাগিয়ে তুলতে প্রয়াস পেয়েছেন । কবি জরাজীর্ণ পুরাতন সমাজ ও রীতিনীতি ভেঙ্গে নতুন দেশ ও জাতি গড়তে তাঁর কাব্যে ভাঙনের খেলা খেলেছেন । কবি পরাধীনতার বিরুদ্ধে , অন্যায় – অবিচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘাষণা করেছেন । সমকালীন যুগ , তার রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্ত , সংশয় , দ্বিধা , অনিশ্চয়তা , অবক্ষয় সুকান্তর কবিসত্তা গড়ে তুলেছে । তার কবিতায় উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরাধী চেতনা প্রতিফলিত হয়েছে । বিদ্রোহী কবিতায়ও দেখা যায় , সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দ্বারা পদদলিত এদেশ দীর্ঘকাল শাসন , শাষেণ , অন্যায়, অবিচার আর বৈষম্যের পঙ্কিলতায় আচ্ছন্ন থেকেছে । সমাজ সচেতন কবি এ সমাজ ও রাষ্ট্রের অবিচার এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিপ্লবী মনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন । কবিতায় কবির এই বিদ্রোহ ও প্রতিবাদ উচ্চকিত থাকবে যতদিন না তার মূল উৎপাটিত হয় ।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার আলােেক কবির বিদ্রোহী সত্তার স্বরূপ নির্ধারণ

৪. বর্তমান সময়ের নানারকম অসাম্যের প্রেক্ষাপটে বিদ্রোহী কবিতার প্রাসঙ্গিক:

বর্তমান সময়ে নানা রকম অসাম্যের ভীড়ে আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি এ বিদ্রোহী কবিতার প্রাসঙ্গিকতা ও তার অম্লান তাৎপর্যের কথা । উপনিবেশবাদের অবসান ঘটলেও বিশ্বায়নের শৃঙ্খল আর ধনতন্ত্রের শাষণ বঞ্চনা অত্যাচার নির্যাতনসহ আর্থসামাজিক বৈষম্য সবকিছুই বলবৎ আছে । অত্যাচারীর খঙ্গ কৃপাণে’র তলে ‘ উৎপীড়িতের ক্রন্দন রালে ‘ এই বাংলার আকাশে – বাতাসে আজও প্রতিনিয়ত ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয় । অন্যদিকে মানুষের শক্তির প্রতি , তার বীরত্বের প্রতি অনাস্থাও সমানভাবে অটুট । তাই নজরুলের ভাষায় , শান্ত থাকার অবকাশ মিলছে

 চতুস্পর্শের প্রতিবাদহীন মেরুদণ্ডহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে হীন , মে শাষণ , পীড়ন আর বৈষম্য থেকে মুক্তির সংকল্প নিয়ে মানুষের অপরিমেয় শক্তির উদ্বোধন ঘটিয়ে নজরুল – কথিত বিদ্রোহের রণে অবতীর্ণ হওয়ার যেন বিকল্প নেই । উপসংহারঃ পরাধীন ভারতবর্ষে কাজী নজরুল ইসলামের আবির্ভাব ধূমকেতুর মতা ে। ধূমকেতুর মতাতেই তিনি যুদ্ধ ঘাষণা করেছেন দাসত্বের বিরুদ্ধে , শশাষণে – শাষণে জর্জরিত জীর্ণ সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে এবং ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে । তাঁর এই বিদ্রোহ সমাজের সর্বস্তরে ধেয়ে চলেছে । সর্বোপরি কবির বিদ্রোহ চেতনায় প্রবল অহমিকা প্রকাশিত হয়েছে । শেষ উচ্চারণেও কবি নিজেকে অন্য সবার চেয়ে উচ্চাসনের সত্তা বলে ঘােষণা করেন। পুরাে কবিতাটি অসম পঙক্তির মাত্রাবৃত্তের যে তান কবিতার ভেতর ভেতর সুরের ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করে এ কবিতায় তা নেই। বিপরীতে আছে ভাষার প্রবাহমানতা এবং বক্তব্যের প্রয়ােজনে ভরাট উচ্চারণ ভঙ্গি। এর ভারকেন্দ্রে রয়েছে একজন সাধারণ আমির বিশেষ আমিতে উত্তরণচেষ্টা। সে চেষ্টায় নজরুল সফল।

‘বিদ্রোহী’ কবিতার আলােেক কবির বিদ্রোহী সত্তার স্বরূপ নির্ধারণ

স্মরণীয় এই কবিতাটির জন্যেই নজরুল বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্থায়ীভাবে বিদ্রোহী আখ্যায় ভূষিত হয়ে গেছেন। প্রশ্ন হলাে, এই কবিতায় উল্লিখিত বিদ্রোহী কি কবি নিজে? উল্লেখ্য যে বিদ্রোহীর প্রথম স্তবকে চারবার এবং পরবর্তী তিন স্তবকে একবার করে একটি সম্বােধন বাক্য বল ঘুরে ঘুরে এসেছে। এ কবিতার শব্দ নির্বাচন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনভাবে নির্বিচারী ছিলেন এবং এর কারণগুলাে যৌক্তিক ও স্পষ্ট।

এ কবিতাটি বাঙালির আত্ম-জাগরণের মূলমন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে যায় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেণির বাঙালির আবেগের জায়গায় তীব্র আঘাত দেয়। এভাবে একটি জাতির বিশুদ্ধ আবেগকে আত্মীকরণ করে কবিতাটি হয়ে ওঠে জাতির আত্ম-জাগরণের মন্ত্র।

 

প্রতি সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট পাওয়ার জন্য kormojog.com এর ফেসবুক পেইজ  কর্মযোগ লাইক এবং ফলো করে রাখ।

 

About Karmojog

Check Also

এসএসসি ২০২২ শারীরিক শিক্ষা ১১ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

এসএসসি ২০২২ শারীরিক শিক্ষা ১১ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

এসএসসি ২০২২ শারীরিক শিক্ষা ১১ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর SSC 2022 11th Week Sharirik Shikkha Answer, …