ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত সম্পর্কিত সাধারণ ধারনা জ্যামিতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আকৃতি গুলোর মধ্যে বৃত্তের ব্যবহার সবথেকে বেশি।তাই বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনেও বৃত্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারাটা আমাদের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। ছোটবেলা থেকে বৃত্তের সঙ্গে আমাদের গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। গণিত ও বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে হলে অবশ্যই বৃত্ত সম্পর্কিত সাধারণ বিষয়গুলোকে জানতে হবে। নিম্নে আমরা বৃত্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন সূত্র ও সংজ্ঞা উপস্থাপন করছি সচিত্র উদাহরণসহ।
নিম্মে ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করা হল
(BCS প্রিলিমিনারিতে রেখা, কোণ, বৃত্ত সম্পর্কিত,ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য, পিথাগোরাসের উপপাদ্য, বৃত্ত সংক্রান্ত উপপাদ্য, পরিমিতি সরল ক্ষেত্র ও ঘনবস্তু থেকে সর্বোচ্চ ০৩ নম্বর থাকবে এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও বৃত্ত সম্পর্কিত প্রশ্ন থাকে)
বৃত্ত কাকে বলে?
বক্ররেখার দ্বারা আবদ্ধ একটি সমতল চিত্র যার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে সীমানা রেখা পর্যন্ত আঁকা সমস্ত সরল রেখা সমান হয় তাকে বৃত্ত বলে। একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বৃত্তের বক্র রেখার প্রতিটি বিন্দু সমান দূরত্বে অবস্থান করতে হবে। এই বিন্দুটি বৃত্তের ভিতরে অবস্থান করবে এবং বক্ররেখা যে বিন্দুগুলো দিয়ে তৈরি হয়েছে সেগুলো থেকে এর দূরত্ব সর্বদা সমান থাকবে। নিম্নে একটি চিত্রের মাধ্যমে এই বিষয়টিকে দেখানো হলো:
বৃত্তের ব্যাসার্ধ কাকে বলে ?
বৃত্তের কেন্দ্র হতে পরিধি পর্যন্ত দূরত্বকে ব্যাসার্ধ বলে। অন্যভাবে বললে, বৃত্তের কেন্দ্র থেকে পরিধির উপর যে কোন বিন্দুর দূরত্বকে বৃত্তের ব্যাসার্ধ বলে। অর্থাৎ, বৃত্তের কেন্দ্র ও পরিধির উপর যে কোন বিন্দুর সংযোজক রেখাংশ হলো বৃত্তের ব্যাসার্ধ। একটি বৃত্তে অসংখ্য ব্যাসার্ধ আঁকা যায়। বৃত্তের ব্যাসার্ধ হলো ব্যাসের অর্ধেক।
∴ ব্যাসার্ধ = ব্যাস ÷ ২ ।
বৃত্তের কেন্দ্র বা কেন্দ্রবিন্দু কাকে বলে?
বৃত্তের মধ্যে যে বিন্দু থেকে সীমানা রেখা পর্যন্ত আঁকা সমস্ত সরল রেখা সমান হয় তাকে বৃত্তের কেন্দ্র বা কেন্দ্রবিন্দু বলে। কেন্দ্র থেকে বৃত্তের বক্ররেখার দূরত্বকে ব্যাসার্ধ বলা হয়ে থাকে। ব্যাসার্ধের দ্বিগুণকে বলা হয়ে থাকে ব্যাস। মূলত একটি বৃত্তের এই সকল তথ্য দ্বারা বিভিন্ন বিষয়কে হিসাব করা যায়। নিম্নে আমরা তার বেশ কিছু উদাহরণ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।
অথবা, বৃত্ত, গোলক ও রেখাংশের কেন্দ্র । বৃত্তের ক্ষেত্রে এর প্রান্তবিন্দুগুলো অর্থাৎ পরিধিস্থ বিন্দুগুলো বৃত্তটির অন্তস্থ যে নির্দিষ্ট বিন্দুটি থেকে সমদূরবর্তী সেই বিন্দুটিকে ঐ বৃত্তের কেন্দ্র বলা হয়। অর্থাৎ যে নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বৃত্তের পরিধির সকল বিন্দুর দুরত্ব সমান সেই নির্দিষ্ট বিন্দুটিই বৃত্তের কেন্দ্র।
ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত সম্পর্কিত সাধারণ ধারনা
বৃত্তের ক্ষেত্রফল
বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রটি হল πr² যেখানে r হচ্ছে বৃত্তের ব্যাসার্ধ এবং π হচ্ছে একটি ধ্রুবক বা constant যার মান 3.1416 প্রায়। একটি বৃত্তের ব্যাস বা ব্যাসার্ধ জানলে আমরা খুব সহজে সেই বৃত্তটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে পারব।
∴ বৃত্তের ক্ষেত্রফল = πr2 বর্গ একক।
একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ r একক হলে এর ক্ষেত্রফল = r2 বর্গ একক।
বৃত্তের জ্যা কাকে বলে ?
বৃত্তের পরিধির উপর যেকোনো দুইটি বিন্দুর সংযোজক রেখাংশকে বৃত্তের জ্যা বলে। এরূপ দুইটি বিন্দু যোগ করে অসংখ্য রেখাংশ অঙ্কন করা যায়। তাই একটি বৃত্তের অসংখ্য জ্যা থাকতে পারে।
বৃত্তের ব্যাসই হচ্ছে বৃত্তের বৃহত্তম জ্যা। আবার, বৃত্তের যে কোন জ্যা এর লম্ব সমদ্বিখণ্ডক কেন্দ্রগামী। তাছাড়া, যেকোনো বৃত্তের সমান সমান জ্যা কেন্দ্র হতে সমদূরবর্তী। বৃত্তের জ্যা এর আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বৃত্তের দুটি জ্যা এর মধ্যে কেন্দ্রের নিকটতর জ্যাটি অপর জ্যা অপেক্ষা বৃহত্তর।
বৃত্তের স্পর্শক কাকে বলে ?
একটি সরলরেখা যদি একটি বৃত্তকে একটি ও কেবল একটি মাত্র বিন্দুতে ছেদ করে তাহলে ঐ সরলরেখাটিকে বৃত্তের স্পর্শক বলে। অন্যভাবে বললে, একটি সরলরেখা ও একটি বৃত্ত যদি একটি ও কেবল একটি বিন্দুতে ছেদ করে তাহলে সরলরেখাটিকে বৃত্তের স্পর্শক বলে।
বৃত্তের একটি অনন্য বিন্দুতে স্পর্শকারী, ব্যাসের উপর লম্ব সরলরেখাকে বৃত্তের স্পর্শক বলে। অতএব, বৃত্তের স্পর্শক বৃত্তের একটি একক বিন্দুতে স্পর্শ করে। স্পর্শক সবসময়ই বৃত্তের ব্যাস বা ব্যাসার্ধর উপর লম্ব এবং বৃত্তের পরিধির উপর একটি মাত্র বিন্দু দিয়ে অতিক্রম করে।বৃত্তের উপরস্থ কোনো বিন্দুতে বৃত্তে কেবল একটি স্পর্শক আঁকা যায়। আবার, বৃত্তের বহিঃস্থ কোনো বিন্দু হতে ঐ বৃত্তে সর্বোচ্চ দুইটি স্পর্শক আঁকা যায়। তাছাড়া, বৃত্তের কোনো বিন্দুতে অঙ্কিত স্পর্শক স্পর্শবিন্দুগামী ব্যাসার্ধের উপর লম্ব।
ক্ষেত্রফল ও বৃত্ত সম্পর্কিত সাধারণ ধারনা
বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র
বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্রটি হল πr² যেখানে r হচ্ছে বৃত্তের ব্যাসার্ধ এবং π হচ্ছে একটি ধ্রুবক বা constant যার মান 3.1416 প্রায়। একটি বৃত্তের ব্যাস বা ব্যাসার্ধ জানলে আমরা খুব সহজে সেই বৃত্তটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে পারব।
ধরুন একটি বৃত্তের ব্যাস দেওয়া রয়েছে 5 সেন্টিমিটার, এক্ষেত্রে আপনাকে বৃত্তটির ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে হবে। নিম্নে আমরা আপনাকে দেখাচ্ছি কিভাবে আপনি ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে পারবেন।
প্রথমে ব্যাস কে ব্যাসার্ধ পরিণত করতে হবে অর্থাৎ ব্যাসকে দুই দিয়ে ভাগ করলে আমরা ব্যাসার্ধ পাব। অর্থাৎ আমরা পাই বৃত্তটির ব্যাসার্ধ 2.5 সেন্টিমিটার। এখন আমরা হিসাব করলে পাব:
বৃত্তের ক্ষেত্রফল A=πr2A=πr2
⇒A=π(2.5)2⇒A=π(2.5)2
⇒A=19.63495⇒A=19.63495
অর্থাৎ বৃত্তের ক্ষেত্রফল 19.63 বর্গসেন্টিমিটার।
এই পদ্ধতিতে আমরা যে কোন বৃত্তের ব্যাস অথবা ব্যাসার্ধ জানার মাধ্যমে খুব সহজে তার ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে পারব। বৃত্তের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা অনেক রকমের গণিতে প্রয়োজন হয়ে থাকে। এমনকি বড় বড় গাণিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার হয়ে থাকে।
আরোও পড়তে পারেন:
- প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাতে গণিতের সম্ভব্য অংক সমুহ
- ২০২২ সালের চাকরির পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান
- সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান ২০২২
- শব্দ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
- কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম মনে রাখার উপায়
- অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে বার বার আসা প্রশ্ন উত্তর ২০২২
- প্রাচীন যুগ ও চর্যাপদ
বাংলার সকল সরকারি-বেসরকারি চাকরির খবর ২০২২ আমাদের ওয়েবসাইট kormojog.com এ প্রকাশ করা হয়। তাই নতুন সকল চাকরির আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং কর্মযোগ পেজটিতে লাইক দিন।
Thanks sir